October 9, 2024, 4:21 am

সংবাদ শিরোনাম
প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে বগুড়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা!

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীতে মিথ্যা অপবাদে দরিদ্র শিশুর মাথা ন্যারা আটক ২

 

অনিমেশ হালদার,বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধি:

উপজেলার সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের বাররা গ্রামে সুপারী কুড়িয়ে অভিযোগে শিশুর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে সংরক্ষিত মহিলা আসনের ওয়ার্ড মেম্বরের বোনের ছেলে অপু ও মেম্বরের ভাবী। এ ঘটনায় বাররা গ্রামে উত্তেজনা দেখা দিলে সুটিয়াকাঠি ইউনিয়ন পরিষদে শালিশ বৈঠকের আয়োজন করে উল্টো ন্যাড়া মাথার শিশু শাহাদৎকে (১১) এলাকা থেকে বের করে দেয়ার জন্য সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখেন একাধিক মেম্বর। শাহাদতের রিকশা চালক খালু আনোয়ার জানান, বাবা-মাহীন শাহাদৎ ছোট বেলা থেকেই বাররা গ্রামের ব্যাপারী বাড়ি নানির কাছে বড় হয়। গত মঙ্গলবার একই বাড়ির সমবয়সী সিয়ামকে নিয়ে পার্শবর্তী সুপারী বাগানে যায়। সেখানে বাগান মালিকের বউ আনোয়ারাকে দেখে তারা দুজনেই দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় আনোয়ারা শাহাদৎকে ডেকে ওখানে দুটো সুপারি দেয়ার অনুরোধ করেন। শাহাদৎ সুপারি তুলে দিতে গেলে আনোয়ারা শিশুর ঘাড় মাঠির সাথে চেপে ধরে সুপারি গাছের সাথেই রশি দিয়ে হাত পা বেধে রাখে। এ সময় শাহাদৎকে মারধর করা হয়। এ সময় বাড়ির অন্য মহিলারা নিষেধ করলেও থামেনি আনোয়ারা। এক পর্যায়ে শাহাদতের মাথায় পানি দিয়ে বাররা বাজারে কম্পিউটার ও ফ্লেক্সি লোডের দোকানদার অপু এসে শাহাদতের মাথার বিভিন্ন অংশের চুল কেটে দেয় ও মোবাইলে ভিডিও করতে থাকে। মাথায় কালি দেয়ার জন্য প্রস্তুত হলে বাড়ির অন্য মহিলারা শাহাদতের বাধন খুলে দেয়। পরবর্তিতে অপুর মোবাইল থেকে বিভিন্ন জনে ন্যাড়া করার ভিডিওটি শেয়ার হলে এলাকার লোকজন অপু ও আনোয়ারার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়। জনরোষের মুখে মহিলা মেম্বর হোসনে আরা বোনের ছেলে ও ভাবী আনোয়ারাকে রক্ষায় তরিঘড়ি করে সুটিয়াকাঠি ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। সেখানে উল্টো শিশু শাহাদৎকে চোর সাব্যস্থ করে সাদা কাগজে শাহাদতের খালুর স্বাক্ষর রাখেন। একই সাথে খালু আনোয়ার ও শাহাদতের নানীকে হুমকি দিয়ে বলে দেন যেনো শাহাদৎ এলাকায় না থাকতে পারে। ওকে এলাকায় দেখা গেলে সকল চুরির দায় ওর উপর দেয়া হবে বলে শালিশদারগন হুমকি দেয় বলে জানান রিকশাচালকখালুআনোয়ার।
এ ব্যাপারে শাহাদতের নানী বলেন, আমি এ রায় মানিনা। আমার নাতীকে ন্যাড়া বানিয়ে উল্টো ওকেই এলাকা ছাড়া করতে হুমকি দিচ্ছে মেম্বর শহিদ ও হোসনে আরা। বিষয়টি নিয়ে থানায় যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি গরীব মানুষ থানায় যেতে যে খেয়া ভাড়া লাগে তাও আমার কাছে নেই। আমি কিভাবে থানায় যাবো আর থানা কি আমাদের কথা শুনবে।
বিষয়টি নিয়ে শালিশ বৈঠকে রায় দেয়া সুটিয়াকাঠি ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর শহিদুল ইসলাম বলেন অনেক লোক এখানে এসেছিল। আমি হোসনে আরা মেম্বরসহ উভয়ের কথা শুনে এ রায় দিয়েছি। প্রশাসনকে ঘটনা না জানানোর ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি নিরুত্তর থাকেন। বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত অপুর মোবাইলে কল দিলে তার মা রিসিভ করেন। এসময় তিনি ঘটনার সাথে অপুর সংশ্লিস্টতার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি আপনার সাথে দেখা করতেছি।
দৈনিক সমিতির আদায়কারি থেকে মেম্বর বনে যাওয়া হোসনে আরা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে মারধর করে এলাকা ছাড়াসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে দিনের পর দিন। বোনের ছেলে অপুকে দিয়ে বাররা গ্রামে তৈরী করেছেন কিশোর গ্যাং বলে অভিযোগ করেন একাধিকজন। তারা বলেন বাররা গ্রামের সিমান্তবর্তী দুলালের ছেলে হামিমসহ একাধিকজন রয়েছে এ গ্রুপে। ট্রলারে কাজ করার সুবাধে হামিম বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে মেম্বরের সেল্টারে অপুর মাধ্যমে কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন একাধিক ব্যক্তি।
এদিকে মেম্বরের পক্ষ নিয়ে মেম্বর হোসনে আরার আত্মীয় পরিচয়ে লিটু নামে এক ব্যক্তি মোবাইলে কল দিয়ে রিপোর্টটি না করে সাংবাদিককে সমঝোতার প্রস্তাব দেন।
বাররা বাজারের একাধিক ব্যক্তি বলেন সুটিয়াকাঠি ৭, ৮ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের এ সদস্যা হোসনে আরার কারনে এলাকার কিশোর গ্রুপ বেপরোয়া। বিগত কয়েকমাস পূবে ইভটিজিং এর ঘটনায় একটি শালিশ বৈঠকে বসে মেয়ের দুলাভাইকে আইনভঙ্গ করে চড় দেয় হোসনেআরা।
স্বরুপকাঠি থানায় দায়েরকৃত সেই মামলায় সকল আসামীরাই হোসনে আরার প্রশ্রয়ে বাররা গ্রামে নেশাদ্রব্য জুয়া ইভটিজিং সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। আর হোসনে আরার এসব কাজে প্রধান সহযোগী হিসেবে থাকেন কম্পিউটার ও ফ্লেক্সিলোডের দোকানদার অপু ও তার কিশোর গ্যাং বলে জানান তারা। মাথা ন্যারা সহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয় নিয়ে জানার জন্য হোসনে আরার ০১৭৭২৮০৯৫৫৩ নম্বরে বার বার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে স্বরুপকাঠি থানা অফিসার ইনচার্য মুঠো ফোনে বিষয়টি শুনে বলেন আপনি এদেরকে থানায় পাঠিয়ে দেন আমি দ্রুতই সকল অপরাধীকে আইনের আওতায় আনব।

 

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর